DEHLIJ

মনোজ দে

চতুর্দশপদী

মনোজ দে 



১.

হঠাৎ ঝড়ের মতো দেখি একা ফুঁপিয়ে উঠেছ

সমস্ত বারান্দা নিয়ে ইচ্ছে হয় বাঁ-পাশে দাঁড়াই

দীর্ঘ অশোচের পর যেভাবে ফলের টুকরো শুভ

প্রিয়জন কিছু ফুল বিগত শোকের পায়ে রাখে


ঠিক সেই ভঙ্গিমায় যদি বলি খুব ভালোবাসি

তুমি কি লুটিয়ে পড়বে প্রিয়? যাবতীয় দেনা

হিসেব করেছি বহু, নির্বিকার থেকেও দেখেছি

আমি একা পুড়ে মরি সারা ঘর ভাষার অনলে


তবুও খবর ওড়ে। তেমন প্রকাশ্যে আসা নেই

মার্চের দুপুর, শূন্য বাসস্টপ শুধু দেখেছিল

হাওয়ার তো কান নেই, যেভাবে গল্পের থাকে ভাষ্য

ততদূর থেকে তুমি চাও এই দৃশ্য, বিহ্বলতা


পুঁজির বাজার ভেঙে ছুটে আসো পুরোনো রেশনে

তুমি অঙ্কে ভালো, আমি সামান্য বিয়োগ ভুলে যাই




২.

প্রতিচ্ছবি ভেসে আসে, আয়নায় রেখেছ টিপ, আর

রুপটুকু নিদারুণ ভুলে অহরহ খুঁজে ফেরো 

স্নানের সময় খুঁটে নেমে যাও স্বামীর ভেতর

আমি নিরুপায় দেখি ভুলে যাওয়া সহজ স্বভাব


সরলতা থেকে তুলে আনি মেদ, খাদ্যের ভবিষ্য

নিপুণ সামাজিকতা থেকে সরে যায় আলগাভাব

হাসির থেকেও দীর্ঘ হয়ে ওঠে নখ, প্রতিবেশী

অশ্রাব্য চুলের পাশে ঢেকে রাখা বিবাহের ক্ষত


মনে হয় ডেকে বলি কতদিন নিজেকে দেখনি

স্বামীর মঙ্গল চাও, আজ জানি নীলের উপোস

তবুও তো কিছু চাওয়া রয়ে যায় বাকি, আজ তাই

ভীষণ অচেনা লাগে আনকোরা বিবাহউত্তর



বিগত চঞ্চল তুমি শাখা-পলা তখনও তো দূর

এসব প্রশ্নের ভিড়ে জ্বলে ওঠে নাটকীয় ভুল 



৩.

খুব ইচ্ছে হয় একে অপরের স্বপ্নে ঢুকে পড়ি

তোমার গ্রামের বাড়ি, ধানক্ষেত ও ছোট্ট দালান

একে একে সকলের সাথে খুব পরিচয় হোক

অতিথি না ভাবে যেন আজ ফের আমাকে আবার


ধীরে ধীরে পৌঁছে যাব হেঁসেলপ্রসূত নির্জনতা

তোমাকে শেখাব আমি খিদে কতদূর অব্দি বৈধ

উনুনের পাশে বসে দেখব ঠাকুমার কুশলতা

শূন্য পাইপের মাঝে হওয়া ভরে আগুন জ্বালানো


চোখ জ্বলে, নেমে আসে আমাদের কাজল প্রতিভূ

এমন উজ্জ্বল দৃশ্য আমি তোমার সাক্ষিগোপাল

খুব কাছে বসি, স্বচ্ছ চোখের ভেতর দেখি শুধু

প্রিয় আত্মঅবয়ব। বাস্তবতা ভেসে যায় সাথে


তোমার গ্রামের নাম, সব পারিপার্শ্বিকতা ভুলে

এমন রাসের নাম রাখি গৃহস্থের সম্মোহন



No comments

FACEBOOK COMMENT