DEHLIJ

পীযূষকান্তি বিশ্বাস

হৃত

পীযূষকান্তি বিশ্বাস




হৃত-১



পা থেকে পাউরুটি হয়ে ওঠা

আর মনন থেকে মধু 

শুধু তুই জানিস সেই স্কোয়ারকাট

সবুজ চিরে ছুটে যাওয়া লাল চেরি


এই কোথাও বাউন্ডারি হলো,

কোথাও যেন ছক্কা


তারপর

এতোটা বছর কেটে গেলো অবলুপ্তির

কোথাও কেটে গেছে সংযোগ

কোথাও কেটে গেছে মালতী


কোথাও কেটে গেছে অঞ্জন ।






হৃত-২



পাপিয়া, তুই জানতিস ?

সংযোগ মানে কি

চৈত্রের পুকুরে নড়া ওঠা ডাল 

প্রচ্ছদ ছিঁড়ে উঁকি মারা স্বপন-কুমার



কানাচে এখনো আমড়া গাছ

দুপুর জানলায় 

ইতিহাস পাতার ভাঁজে লুকিয়ে এখনো কিশোরমুখ

পোস্টকার্ডে এঁকে রাখা সামান্তা ফক্স

বিকেল মানে জানালায় উঁকি মারা 

কি যেন নাম ?



তুই জানতিস শুধু মেরিগোল্ড

তার পাতা ঈষৎ কালচে

তার পাপড়ি ঈষৎ হলুদ

এক ক্লাস ফাঁকি স্কুল

এক ক্লাসমেট 


নাজুক থেকে নাজুক এই পরিচয়

ফুল বা মালতী 


কেউ কারো নাম নয় ।





হৃত-৩



খিদে পেটে বিস্কুটের সংজ্ঞা দেওয়া

সে ছিলো নাবালকের কাজ

তুই সে সব বুঝতে পারিস নি, পরিমল

আমিও না 



তুই কি ঠিক জানিস

ববি কেন গাছে গলায় দড়ি দিয়েছিলো ? 

নিস্তব্ধ পুকুর পাড়ের সেই আমগাছটায়

হাও হাও কেঁদেছিল পিতা সম্বল দাশ !



আমরা কেউ বড় হতে পারিনি

সংজ্ঞা দিতে পারিনি

না বালকের, না বালিকার

এখনো আমাদের খিদে পায়

শরীরে, 

মননে, 

বিস্কুটে ...




হৃত-৪


কারো কারো নাম হয় মন, 

কারো কারো মনন 

এই সব ব্যাকরণের বিষয়, তুই জানতিস ভোলানাথ !

আমাদের হাতের হুকে পাটপাতা ফুটো হয়ে যায়



এই ভাবে অনুধাবন করা মুশকিলঃ

কি হলো পাতা

আর কি বা হলো পাট

আর কি হলো ফটাস  !


দিদিমণি, বলেছিলো 

এতোটা  রাত জেগেছিস, আর একটু জাগ

এতোটা খেজুর আছিস, হতে পারিস তাল

এতোটা যে তাল হতে পারিস কবি

কি হবি বলঃ জাম না বট ?



আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে অঞ্জন বলেছিলো

আই শ্যালবি এ পাইলট ।



হৃত-৫


দ্যাটস দ্যা লাইফ ফর মি

লাইফ থেকে অঞ্জন হারিয়ে গেছে !


লক্ষকোটি কবিসংখ্যায় হারিয়ে যাচ্ছে বন্ধু ! 

শহস্রকোটি শব্দমালায় হারিয়ে যাচ্ছে সংযোগ

শ্যামা, উমা, ফাল্গুনি , তোরা  জানিস ঠিক

কোথায় হারিয়ে গেলো অঞ্জন ?


এতোটুকুই জানতাম যে হাফপ্যান্ট

এতোটুকুই জানতাম যে সে আমার বন্ধু

আসলে

অঞ্জন কবি হতে চেয়েছিলো  


ফিরে আসতে চেয়েছিলো 

অশ্বত্থের কাছে ...




হৃত-৬


হৃত মানে মৃন্ময় পাঠশালা

খোঁজ মানে জলের গন্ধে জেগে ওঠা কলমি

আর নাতি-উচ্চ সজনের ডাল থেকে

পুকুরে হঠাৎ দেওয়া ঝাঁপ   



চৈত্রের দুপুরে এখনো পাটপাতাঃ

কচিকচি

পৌষের গম ক্ষেতে এখনো শালিকঃ

উচ্চস্বর    


অঞ্জন ! অঞ্জন !

তুই আছিস, তুই আছিস, 

আছিস এখানেই  !!


আমিই হারিয়ে গেছি মনোরঞ্জনে ।


  












2 comments:

FACEBOOK COMMENT