DEHLIJ

অভি সমাদ্দার

তলান্ন

অভি সমাদ্দার



 তলান্ন, এই তরঙ্গপ্রাণ- ৩


গানের কাছে বসে থাকা, সাড়াময়

ডুবেছি চাঁদেরও পিছু পিছু

এসবই বাঁক নেওয়া চরিত্রে

কবিতার আপন দুধকুমার 

ঢকঢক শব্দ তোলে আর বুনে দেয়

আমাদের যত অসহজ দিনমান

আমাদের শূন্যবোধের করতলগুলি

জলও গড়িয়ে যায়

সেই হাত ধুতে ধুতে

বলো কে আর শোনাবে আশাবরী

সবদিকে

ফতুর জনজীবন

শুধু উপুড়-ক্রিয়াটি, তরল পাল্কি ছুঁয়ে 

ঝরে পড়ে গ্লাসের আত্মায়

সেও তো এক দূরশ্রুত ডিহি সুর 

তাতেই বেজে ওঠা মরা চাঁদের পাশে

তাতেই ঢুলু ঢুলু চোখের অনুবাদ

তোমরা যাকে বলো- স্মৃতি ও সাঁকো

আমরা তার-দ্রিদিম পারাপার  !



তলান্ন, এই তরঙ্গপ্রাণ- ৫


হাতে ধরা নিঝুম গ্লাস

একটু পরেই গড়িয়ে পড়বে

টলটলে আত্মমোহন

কেননা সে জমা কম ও খরচের অধিক কলতান

আহা কলতান  ! 

কতোটা কাব্যি দিয়ে গেল

কতোটা খনন আশ্রয় ! 

সে হিসেবে - ফুরোয় একজীবন

সে হিসেবে - আমারও দীনানু-সমতা

গড়িয়ে পড়ে 

টুপার্ত জলের কোনো ব্যথায়

এইরূপ ঠিক-করা নাচের সুতো

এইরূপ ঝঞ্ঝাটতলে

ও আমার ভেতরিক দাদন

বলো 'আমি'-টির এই মাতোয়ারা

কোথায় রাখব

রোজ রোজ  ছোপ সীবনের মৃদু রাত

তবে কোথায় রাখব

যা তলের ইষ্ট ছুঁয়ে থাকা এক মন

যা ক্ষরিত রাত্রির

যাকিছু নিঝুম বিভাজিকা

রাখব কোথায়  !



তলান্ন, এই তরঙ্গপ্রাণ-  ৭


কীভাবে যে শুরু হয়

সমস্ত কথার শুরু

ছটফটের মধ্যে ছটফটের তরল উথলে ওঠে

আমিও খিন্ন এক আবহাওয়ায়

খুঁজে ফিরি

কবিতা ও কুসুমগুলি

বাক্যের ওপারে যে শান্ত তুলবে রিসিভার

তাকে অন্তত বলে ওঠা যাবে

- সবুর করুন

খানিক পরেই দেখা যাবে

চাঁদের উল্টোপিঠ

কে যেন পর্যটন খুলে

         ফিরে আসবে নিঁদ-হারা

রাত্রি খুঁটে খুঁটে

ফিরে আসবে মনের মদ্যপানরত

কিছু কিছু সরব ঘটমান

কবিতায় একজোড়া জলের ভরসা

কেউ হয়তো কুড়িয়ে নেবে

মরা নদীর স্পষ্টতায়

তলান্নগ্রামের পথে পথে

কুসুমগুলি ছড়িয়ে থাকবে


যদি সেও  কিছু

ছিপি খুলে গড়ানো, রক্তলিপি

রক্তের তন্তুর ভেতর

- কথা শুরু হবে




তলান্ন,  এই তরঙ্গপ্রাণ- ১১


ছিটকে ছাটকা মনের ম্যুরাল

মন- এক অযোগ সংহিতা

তাতে কী যে গড়ন গঠন ভাঙে 

আর জোড়া লাগে

কী যে চাঁদের টই আর ছায়ার পল্লী  ! 

তুমি শুধু কিছু দূর অব্দি

তারই টুকরো ন্যুন রূপ 

আঁকের বহতা

তুমি শুধু কিছু দূর 

গহনে প্রতিফলিত

তার জল রং

জ্যোৎস্না রং 

মুঠো করে ধরে ছড়িয়ে দিতে পারো


এক ঝিরি  বিহ্বল সারেং

ভেসে যায়

বিগলিত সাঁঝিম খুঁটে খু্ঁটে 


এ-ছবিও কি পংক্তিময় কারো ফারাকে গড়ে ওঠা ? 




তলান্ন, এই তরঙ্গপ্রাণ- ১২


সমূহে নেমেছে এক মিনিট

এক মিনিটেই অঙ্গহারা

এমনই সে স্থির-দিলরুবা 

যার খেসারত দিতে দিতে

এ-জীবন যে কতকিছুর খরচ লিখে গেল

লোকেও কত কি চোখ রাখে বাহারে

নিমেষ রাখে

ঠক্ শব্দে গলাধঃকরণ 

আমিও নিছক মনোনীতার পাশে বসে , ভাবি

বেঁচে থাকার এই তুমুল ঢেউ

সেভাবে গড়াল কোথায় 

তার জলাশয় তার আলোদানা

সেভাবে স্থায়ী বা কোথায়

বরং বেখেয়াল

আমাকে তরলে, তন্তুতে রেখো

আমাকে রেখো তুমি

ফুটকি-আশ্রয়ে

যাতে লোকে মেলাতেই না পারে

যাতে লোকে সহজ ভুলে য়ায়

যে ছিল একজন, তারও ছিল অবশেষ  সুতোর টান

বড়ো বিস্ময়বোধক !


No comments

FACEBOOK COMMENT